চট্টগ্রামে গণহত্যার শহীদদের স্মরণে মহানগর আ’লীগের আলোচনা সভা
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম গণহত্যা ঔপনিবেশিক আমলে জ্বালিয়ানওয়ালা বাগ গণহত্যার কথা মনে করিয়ে দেয়। ঐ গণহত্যার ঘটনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৃটিশ সরকারের দেয়া নাইট উপাধি প্রত্যাখান করেছিলেন।
চট্টগ্রাম গণহত্যার পর ২৪টি মূল্যবান প্রাণহানি হলেও নানাভাবে বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা হয়েছে। এটা আমাদের কাছে লজ্জা ও ঘৃণার বিষয়।
আজ ৩৪ বছর চট্টগ্রাম গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং দোষীদের ফাঁসির রায় রয়েছে। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশে যারা হত্যা, নাশকতা, সন্ত্রাস ও মৌলবাদ এবং জঙ্গীবাদকে প্রশ্রয় ও ইন্ধন দেয় তারা জাতির দুশমন। এরা আমাদের আশে পাশেই আছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার রূপকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন- সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সামরিক স্বৈর সরকারের প্ররোচনায় পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে।
এই গণহত্যা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। আজ ৩৪ বছর পর বিলম্বিত বিচারে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হওয়ায় শহীদদের আত্মা ও তাদের পরিবারদের মাঝে শান্তি ও স্বস্তি নেমে এসেছে। এই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত হতে পারত। কিন্তু সামরিক স্বৈর সরকার এবং বেগম জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ক্ষমতাসীন থাকার সময় উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে চট্টগ্রাম গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে চেয়েছিল। আমরা জানি সামরিক স্বৈরাচার ও বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে এদেশে কলঙ্কিত গণত্যাগুলো সংগঠিত হয়। তাদের প্ররোচনায় এদেশে জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটে। তাদেরকে ব্যবহার করে ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট তারেক জিয়ার হাওয়া ভবন থেকে গাইডলাইন অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা করা হয়।
সেদিন শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও ২৬ জন নেতাকর্মীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। কয়েকশ নেতাকর্মী গ্রেনেডের স্পিন্টারবিদ্ধ হয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রবণশক্তিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ ধরনের নারকীয় অনেকগুলো ঘটনা বিচার প্রক্রিয়া অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও শেখ হাসিনা বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন এবং যুদ্ধাপরাধী সহ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছেন।
এ ধরনের আরো অনেক নারকীয় হত্যাকান্ডের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার পর তা কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আমি এসব নারকীয় ঘটনার দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাই।
তিনি আজ(২৪ জানুয়ারি) সকালে পুরাতন বাংলাদেশ ব্যাংক সংলগ্ন আদালত ভবনের পাদদেশে ১৯৮৮ সালের ২৪শে জানুয়ারি গণহত্যার শহীদদের স্মরণ বেদীতে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় একথাগুলো বলেছেন।
তিনি আরো বলেন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং দেশকে বিপন্ন করে পিছনের দরজার দিয়ে ক্ষমতা দখলের জন্য ষড়যন্ত্র হয়েছে, হচ্ছে এবং হবেই। যতদিন পর্যন্ত অপশক্তিকে রাজনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে আমরা নিমূর্ল করতে না পারব ততদিন পর্যন্ত আশক্সক্ষা থেকেই যাবে।
এ আশঙ্কা দূর করার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থাকতে হবে। তিনি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি পদে বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. আবুল হাসেম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে এডভোকেট এ এইচ এম জিয়াউদ্দিনসহ পুরো প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী, উপদেষ্টা আলহাজ্ব সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম ফারুক, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, শ্রম সম্পাদক আব্দুল আহাদ, নির্বাহী সদস্য বখতিয়ার উদ্দীন খান, মহব্বত আলী খান, আলহাজ্ব পেয়ার মোহাম্মদ, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, হাজী মোঃ বেলাল আহমদ, থানা আওয়ামী লীগের হাজী সিদ্দিক আলম, সাহাবউদ্দীন আহমেদ, আনছারুল হক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আবসার উদ্দিন চৌধুরী, আসিফ খান, আশরাফুল আলম প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার শুরুতে শহীদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন ও সভা শেষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতবৃন্দ ২৪ জানুয়ারির শহীদদের স্মরণ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।